৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
তীব্র তাপদাহে বিশুদ্ধ পানি ও শরবত বিতরণ করলো আলীমাবাদ সমাজ কল্যাণ সংস্থা আমার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা চলছে : এসএম জাকির হোসেন উপজেলা নির্বাচন: ভোলার তিন উপজেলায় ৩৭ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ভান্ডারিয়ায় ককটেল ফাটিয়ে ও কুপিয়ে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই বরগুনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনেই আচরণবিধি লঙ্ঘন প্রার্থীদের পাথরঘাটায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা, ৪ জনকে শোকজ কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এল মৃত ডলফিন বাউফলে গর্ভে থাকা ভ্রূণ নষ্ট, স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অনশন ভোলায় পুলিশে চাকুরী দেওয়ার নামে প্রতারণা : প্রতারক আটক উপজেলা নির্বাচন : গৌরনদীতে তিন প্রার্থীর ব্যতিক্রর্মী প্রচারণা

সেচ্ছাচারিতা আর অনিয়মে দৈন্যদশায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বাণী: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড.ছাদেকুল আরেফিন। ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর ভিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়ে যোগদান করেছিলেন ৬ নভেম্বর। যোগদানের সময় কারো থেকে ফুলও গ্রহন করেন নি। বলেছিলেন সব সংকট কাটিয়ে এগিয়ে যাবো।
গত আড়াই বছরে তেমন কোন সংকট কাটাতে পারেননি তিনি। বরং সংকট বাড়ছেই। সময়ের কাজ সময়ে না করা। টেবিলে ফাইল আসলে ১৫ দিনেও সেই ফাইলে স্বাক্ষর না করা। শূন্য পদ পুরণে অনাগ্রহী। সেশনজট কমানোর উদ্যোগ না নেয়া। নুতন করে একটি ডিপিপিও জমা না দেয়ার ব্যর্থতা। পুরনো প্রকল্পের কাজে তদারকি না করা। অকারনে শিক্ষকের চাকরি অস্থায়ী অবস্থায় দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখা। সহকারী অধ্যাপক পদের পদোন্নতি না দেয়া। শিক্ষার মান নিম্মমূখী করাসহ পদে পদে ব্যর্থতার ছাপ। আর এভাবেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর রেংকিং করা ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য ৪৫তম।
এদিকে ভিসি ড. ছাদেকুল আরেফিন নিজে ৬টি পদ দখলে রেখেছেন । যে সব পদ হলো প্রো-ভিসি, ডিন-বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ, ডিন-জীববিজ্ঞান অনুষদ, ডিন- বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ, ডিন-সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও ডিন- আইন অনুষদ৷
অভিযোগ রয়েছে গত আড়াই বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য তিনি কোনো কাজই করেননি। কথার ফুলঝুরি আর ছোট মাঝারী মানের বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের অতিথি হিসেবে আসন গ্রহন ছাড়া তার কোন কাজ নেই। দ্বায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত একটি ডিপিপিও জমা দিতে পারেননি৷
এছাড়াও অভিযোগ আছে ভিসির দপ্তরে ফাইলের পর ফাইল জমা থাকা সত্বেও ১৫ থেকে ২০ দিন লাগিয়ে দেন ফাইলগুলো স্বাক্ষর করতে৷ ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কাজে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেডিং এ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৪৫ তমে দাড়িয়েছে যা দক্ষিণাঞ্চলের এক মাত্র সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠের জন্য একটি লজ্জাজনক অধ্যায়। অথচ পুর্বে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর ছিল ৮ম।
ভিসির অদক্ষতা -স্বেচ্ছাচারিতা আর খামখেয়ালীপনার কারণে গত দুই অর্থবছরের বাজেট থেকে সিংহভাগ টাকা বিশ্ববিদ্যালয় খরচ করতে পারেনি বিধায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন টাকা কেটে নিয়ে গেছে। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কোন কাজই হচ্ছে না।
এদিকে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের পরিবহন সংকট। আবসিক সমস্যা দুর করা দরকার। প্রশাসনের দুর্বলতার কারনে প্রথম ধাপের উন্নয়ন কাজ এখনও শেষ হয়নি। এর দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।
এদিকে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুনিয়র’ পদে যোগদানের জন্য আবেদন করতে চাইলেও সেটি পারেন না বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মর্যাদা’ ক্ষুন্ন হওয়ার কথা বলে অনাপত্তি পত্র দেয়া হয় না তাদের। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, সিনিয়র পদ থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে জুনিয়র পদে যোগদান তাদের জন্য স্বস্তিকর নয়।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে আবেদন করতে না পেরে হতাশা প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাওয়া শিক্ষকরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তারা পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যেতে অনাপত্তি পত্র চেয়েছিলেন। তাদের সেটি দেয়া হয়নি।
শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনাপত্তি পত্র না দেয়ার কোনো লিখিত নিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নেই। মৌখিকভাবে এটি কার্যকর আছে।
সম্প্রতি উপাচার্যের মেয়ে অহনা আরেফিন রবিপ্রবিতে প্রভাষক পদে নিয়োগ পাওয়া নিয়ে ড.ছাদেকুল আরেফিন গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হয়েছিল।
ভিসি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় বসে পারিবারিক আর বরিশাল শহরের অখ্যাত সংগঠনের ছোটখাটো প্রোগ্রামে অংশ নিতে ব্যস্ত থাকার ফলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাহাড়সম হচ্ছে সংকটগুলো।
এ ব্যাপারে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন এর মোবাইলে দু’বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। এমনকি তার নম্বরে ম্যাসেজ ও হোয়াটআপসে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলেও তিনি উত্তর প্রদান করেন নি।

সর্বশেষ